সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিষবাস্প ছড়াতে পশ্চিমবঙ্গে একজোট বিজেপি ও তৃণমূল

শনিবার, অক্টোবর ২৯, ২০১৬ 0 Comments A+ a-

TMC BJP nefarious nexus to incite communal tension in West Bengal - representative image - Credit Muslim Mirror
পশ্চিমবঙ্গে মমতার প্রশ্রয়ে দ্রুত বিস্তার লাভ করছে সঙ্ঘ পরিবার - ছবি নমুনা স্বরূপ। স্বত্ব মুসলিম মিরর 


একটা প্রবাদ আছে যে ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়।পাঞ্জাব আর বাংলার চেয়ে বেশি সমগ্র ভারতে কারুরই ঘর বোধহয় দাঙ্গার আগুনে পোড়েনি তাই যখন বাংলার আকাশের কোন লাল হচ্ছে দাঙ্গার আগুনে, তখন সামগ্রিক ভাবে সমস্ত খেটে খাওয়া গরিব বাঙালিদের আজ দাঙ্গা ও অশান্তির সিঁদুরে মেঘ দেখে নিজেদের তৈরি করতে হবে এক ব্যাপক প্রতিরোধ সংগ্রামের জন্যে, কারণ রাজ্যে আজ তৃণমূলের সাথে টেবিলের তলায় হাত মিলিয়ে উঠে আসছে বিজেপির হিন্দুত্ববাদের রথ, বাংলার মাটি যে সত্যিই ব্রাক্ষণত্ববাদী ফ্যাসিস্ট শক্তির কাছে দুর্জয় ঘাঁটি রইলো না মমতার প্রশাসনিক সাহায্যের কারণে তা আজ কিন্তু বাংলার সাধারণ মানুষ নিজেদের চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছেন। খড়্গপুর আর হাজীনগরে মহরম ও দুর্গাপূজার বিসর্জনের আড়ালে যে ঘৃণ্য দাঙ্গা লাগানো হলো, যে ভাবে তৃণমূল আর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও আরএসএস হাত মিলিয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে পথে নামলো তা কিন্তু চোখে তাক লাগিয়ে দিল। যে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী কে নিয়ে সাধারণ একটা কার্টুন সম্বলিত ইমেল ফরোয়ার্ড করার দায়ে একজন অধ্যাপককে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারে, বা তারক বিশ্বাসের মতন নাস্তিকতার প্রচারকারীদের হঠাৎ এক তৃণমূলী নেতার অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করে অবলীলায়, সেই রাজ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে দাঙ্গার আগুনে হাওয়া দিতে থাকা তপন ঘোষের মতন লোকেরা বা হিন্দু দেব দেবীর ছবি দেওয়া প্রোফাইলের আরএসএস কর্মীরা কিন্তু সরকারের ক্রোধ বা কোপের শিকার হয় না। যে রাজ্য সরকারকে আবার বিজেপি মুসলমান তোষনকারী বলে অভিযুক্ত করে সে রাজ্যে এই ঘটনা সত্যিই তাজ্জব করে।

দাঙ্গা কোনদিন স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে হয়নি।সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা করার জন্যে লাগে পরিকল্পনা, প্রচার  ও পরিকাঠামো, আর এই দুইয়ের মধ্যে নিখুঁত সমন্বয় সাধন করার মাধ্যমেই দাঙ্গার মাধ্যমে রাজনৈতিক লাভ কুড়ানো সম্ভব হয়। পশ্চিমবঙ্গের ভিতর আরএসএস ও অন্যান্য ব্রাক্ষণত্ববাদী হিন্দু সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রভাব শুরু থেকেই উঁচু জাতের শহুরে অবাঙালি হিন্দুদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। আর সাম্প্রদায়িক দ্বন্ধ এই রাজ্যে, যে রাজ্যে শ্রমিক-কৃষকদের জঙ্গী আন্দোলন সমগ্র ভারতের শাসক শ্রেণী কে বারবার কাঁপিয়ে তুলেছিল, শুধুমাত্র অবাঙালি মুসলমান ও অবাঙালি হিন্দুদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। সাধারণ খেটে খাওয়া বাঙালিরা ধর্ম ভীরু হয়ে উঠতে থাকলো নয়া উদারনৈতিক অর্থনীতির দুয়ার খুলে যেতেই। হঠাৎ করে রাজ্যের বাইরে কাজ করতে যাওয়া উঁচু জাতের হিন্দুদের মনে হলো যে পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের ভীষণ বাড়বাড়ন্ত হয়েছে আর ঘরে ফেরার পরে সেই কথাই তারা প্রতিবেশীদের জানাতে থাকলো। শহর ও মফসলের যে সমস্ত গুটিকয়েক অঞ্চলে হিন্দু-মুসলমানরা পাশাপাশি নির্ঝঞ্ঝাটে বাস করতেন সে সমস্ত জায়গায় ধীরে ধীরে ghettoisation শুরু হলো আর আমাদের প্রগতিশীল ও তৎকালীন ‘বামফ্রন্ট’ শাসিত পশ্চিমবঙ্গের তথাকথিত ভদ্রলোকদের পাড়ার দূর দূর পর্যন্ত কোথাও মুসলমান বা দলিত নমঃশূদ্র মানুষের বাস আর দেখা গেল না। নব্বইএর দশকের শেষের দিকে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের আঁচল ধরে এই রাজ্যে সিঁধ কেটে বিজেপি-আরএসএস ও নানা ধরণের হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী সংগঠনের বেনোজল কে ঢুকতে দেখেও নির্লিপ্ত থাকে ব্রাক্ষণত্ববাদী নেতৃত্বে চলা বামফ্রন্ট সরকার। মমতার অসীম করুণায় আর তৃণমূলের সহযোগিতায় ভাইরাসের মতন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে ব্রাক্ষণত্ববাদী রাজনীতি, সাম্প্রদায়িক বিষবৃক্ষে নিজ স্বার্থে মমতা থেকে বুদ্ধ সবাই জল  ঢালতে থাকে এবং এই বিষ বৃক্ষের ফল পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাতাস কে বিষিয়ে দেয়।

বিজেপির সাথ ছেড়ে কংগ্রেস কে সাথে নিয়ে যেদিন থেকে মমতা বন্দোপাধ্যায় রাজ্যে ক্ষমতা দখল করেছিল সেইদিন থেকে তৃণমূল কংগ্রেস ও রাজ্য সরকারের দৃষ্টি ছিল যেনতেন প্রকারে বুদ্ধদেবের পথে চলে রাজ্যের থেকে জঙ্গী শ্রমিক ও কৃষক আন্দোলন কে নিকেশ করার দিকে, আর তাই ২৭ শতাংশ মুসলমান জনসংখ্যার এই রাজ্যে হিন্দু মুসলমানের মধ্যে বিভেদ ছড়ানোর কাজে বিশেষ করে নামে মমতার সরকার। যে রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলমানদের করুণ দশা সচ্চার কমিটির রিপোর্টের পাতায় পাতায় ছড়িয়ে আছে সেই রাজ্যের মুসলমানদের উন্নয়নের নামে মমতার অবদান ছিল ইমাম ভাতা, মজলিশ, হাদিস পাঠ, মাথায় দাবনি বেঁধে দোয়া করা, ও ইফতার পার্টি। মুসলমানদের সবচেয়ে প্রতিক্রিয়াশীল অংশ কে সমস্ত মুসলমানদের প্রতিনিধি হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের কথায় সমস্ত সম্প্রদায় কে, বাংলা ভাষী ও উর্দু ভাষী মুসলমান নির্বিশেষে সকল কে চলতে জোর করে মমতার সরকার। সারা রাজ্য জুড়ে কট্টর কাঠ মোল্লাদের তোয়াজ করা শুরু করে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তৃণমূল সরকার আর এই সুযোগে নেপোয় মারে দই’য়ের  মতন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় সংঘ পরিবারের পাল্টা প্রচারের, হিন্দু অবাঙালিদের সাথে সাথে এবার অভিজাত বাঙালি হিন্দুদের মধ্যে সুপ্ত জাতি ঘৃণা ও বিদ্বেষ কে সারা রাজ্য জুড়ে তীব্র করার কাজে জোটে আরএসএস ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। পরবর্তীকালে এদের সাথে জোটে হিন্দু সংহতির তপন ঘোষের মতন পাঁড় দাঙ্গাবাজরা। ২০১৪ সালের মোদী তরঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের দুটি লোকসভা আসন, যার মধ্যে একটি শ্রমিক আন্দোলনের গড় - আসানসোল জিতে নেয় বিজেপি। তারপর থেকেই অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদীর প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে বাংলার মাটিতে নিজের ঘাঁটি শক্তিশালী করতে নামে বিজেপি। মমতা বন্দোপাধ্যায় জঙ্গী হিন্দুত্ববাদী কার্যকলাপ রোধ করতে কোন পদক্ষেপই নেয়নি, সরকার বরং অনীহা দেখিয়ে তলে তলে এই হিন্দুত্ববাদের আঁচে হাওয়া দিয়েছে হিন্দু সন্ত্রাসের ঊর্ধ্বগামী লেলিহান শিখা দেখে সন্ত্রস্ত সংখ্যালঘুদের নিজের ভোট ব্যাংকের স্বার্থে মেরুকরণ করার জন্যে।

গোপীবল্লভপুরের জোতদার ঘরের সন্তান, আরএসএস এর পাঁড় নেতা দিলীপ ঘোষ কে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির মাথা করে অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদী প্রথমতঃ শহরাঞ্চল ছাড়িয়ে খাস পাড়া গাঁয়ে বিজেপির ঝান্ডা শক্ত করে গেঁড়ে দেওয়ার কাজ শুরু করলো আর দ্বিতীয়ত্বঃ তৃণমূলের আমলে আইন শৃঙ্খলার অবনতি, সিন্ডিকেটবাজি, গণতন্ত্র হরণ, আর মহিলাদের উপর বেড়ে চলা অত্যাচারের পরিচিত অভিযোগের রাজনীতির গন্ডির বাইরে এনে বিজেপিকে ধর্মীয় মেরুকরণের মাধ্যমে ২০১৯ সালের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গকে নিজেদের দুর্জয় ঘাঁটি বানানোর কাজে লাগালো। অমিত শাহ - নরেন্দ্র মোদী ও দিলীপ ঘোষের মতন কেউকেটেরা জানে যে শুধু মাত্র অর্থনৈতিক উন্নয়ন, চাকরি, সস্তা রেশনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যে ভাবে তথাকথিত সার্কাসি বাম ও কংগ্রেস-তৃণমূল ভোটে জিতেছে তার সাথে টেক্কা দেওয়া বিজেপির পক্ষে সম্ভব নয় কারণ বিজেপির শাসনে কোনো রকমের রাখঢাক না করেই একচেটিয়া বিদেশী পুঁজির জুতো চাটা  হয় এবং জনগণের উপর বিদেশী শোষণ শাসনের নাগপাশ কে শক্ত করা হয়। তাই আর্থিক উন্নয়নের কথা, চাকরির প্রতিশ্রুতি, বা কালো টাকা ফেরত আনার মতন বুজরুকি দাবি বারবার চলবে না আর তাই গুজরাট মডেল কে অনুসরণ করে তীব্র ধর্মীয় বিদ্বেষের পরিবেশ সৃষ্টি করে, অভিজাত ও নমঃশূদ্র হিন্দুদের মুসলমানদের জূজূ দেখিয়ে এক ছাতার তলে এনেই একমাত্র বিজেপির পক্ষে ভোটে জেতা সম্ভব। পশ্চিমবঙ্গে তাই আজ গুজরাট মডেল অনুসরণ করে বিজেপি ও তার সহযোগীরা যেমন একদিকে দাঙ্গার আগুন লাগাচ্ছে ঠিক তেমনি অন্যদিকে এই দাঙ্গা আর সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে গেরুয়া শিবির রাজ্যের জোতদার-জমিদার ও বেনিয়া মুৎসুদ্দিদের সাথে সাথে বিদেশী বৃহৎ পুঁজিকেও ইশারা করছে যে তারা যেন এবার বিজেপির উপর কৃপা বর্ষণ করে এবং পশ্চিমবঙ্গের মসনদে যেন আগামী বার বিজেপি জিতে আসতে পারে।


পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে দাঙ্গা আর হিংসার খেলায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি


মালদার চাঁচল, হুগলির চন্দননগর, পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর, বা উত্তর চব্বিশ পরগনার নৈহাটির অনতিদূরে হাজীনগরে যে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের সৃষ্টি এই রাজ্যে ঘাঁটি গেড়ে বসা হিন্দুত্ববাদী শক্তিগুলো করলো তার প্রতিরোধে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বা তৃণমূল কংগ্রেস কি করলো? খড়্গপুরে দীর্ঘদিন ধরে অবাঙালি হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে দ্বন্ধ চলে আসছে। রেল মাফিয়াদের এই শহরে ফরওয়ার্ড ব্লক ও কংগ্রেসের হাতে একসময়ে সমস্ত বড় বড় গুন্ডা ও মাফিয়ারা থাকলেও পরবর্তীকালে মেরুকরণের খেলায় ঢুকে বিজেপি সমস্ত সমাজবিরোধী শক্তির হিন্দু অংশ কে নিজের কবলে এনেছে। কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের বিধায়ক থাকা জ্ঞান সিংহ সোহনপাল ওরফে ‘চাচা’ কে ভোটে হারাতে তৃণমূল বিজেপির সাথে গোপন চুক্তি করেছিল বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই। আইআইটি খড়্গপুরে দীর্ঘদিন ধরে সাংস্কৃতিক সংগঠন সেজে বসে থাকা আরএসএস এর গুন্ডাদের শাখা বা অস্ত্র শিক্ষার শিবির চলছিল, তার সাথেই চলছিল ঘৃণার প্রচার। দিলীপ ঘোষের নির্বাচনে জেতার পর থেকেই খড়্গপুরের অবাঙালি (মূলতঃ হিন্দিভাষী ও তেলেগু) হিন্দুদের মধ্যে উল্লাস দেখা যায়, রমরমা বাড়ে বিজেপির সংগঠনের। দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিমবঙ্গের বাইরে বসে আবাঙালি আরএসএস কর্মীরা হিন্দু বাঙালি সেজে হিন্দি ও ইংরাজি ভাষায় যে ভাবে পশ্চিমবঙ্গের নানা জায়গার নাম করে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছিল তারা দিলীপ ঘোষের ভোটে জেতার সময়ের থেকেই আরও চনমনে হয়ে ওঠে। আরএসএস এর নেতৃত্বে বজরং দল ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতন হিন্দুত্ব-সন্ত্রাসবাদী সংগঠন খড়্গপুর, আসানসোল, দুর্গাপুর, রাণীগঞ্জ, নৈহাটি, দুবরাজপুর, হাওড়া, ইত্যাদী শহরে স্থানীয় অবাঙালি হিন্দু ব্যবসায়ী ও সমাজবিরোধী-মাফিয়াদের সাহায্যে বিগত ১৮ বছর ধরে নিজেদের প্রতিপত্তি বাড়ানোর চেষ্টা করার পর ২০১৪ সালে মোদীর বিজয়ের পর থেকেই তীব্র গতিতে নিজেদের শক্তি ও অনুপ্রবেশ কে বাড়িয়ে নেয়। সিপিএমের প্রতিপত্তি অস্ত গেছে, কংগ্রেসের অবস্থা তথৈবচ, রাজ্যে তৃণমূলের সাথে সরাসরি টেক্কা দেওয়ার মতন কর্পোরেট অনুমোদন প্রাপ্ত তেমন কোন বড় শক্তি না থাকার কারণে দ্রুত শূন্য স্থান পূরণ করে আরএসএস ও তার নানাবিধ সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো।

মমতার সরকার মুখে বারবার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা ও বিজেপির প্রতি হুঁশিয়ারি শোনা গেলেও তৃণমূলের একেবারে তৃণমূল স্তরে গেলেই জানা যাচ্ছে যে হিন্দুত্ববাদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের লড়াই করার কোন নির্দেশ কালীঘাট থেকে আসেনি কারণ কালীঘাটে ব্রাক্ষণত্ববাদী নেত্রী নিজে কোন ভাবেই চান না যে বিজেপি ও হিন্দুত্ববাদের জূজূ রাজ্য থেকে গায়েব হয়ে যায় কারণ তাতে ভীত সন্ত্রস্ত মুসলমান ভোট ব্যাংকের মেরুকরণের কাজে বাঁধা আসবে আর যতদিন দাঙ্গার উপক্রম জারি থাকবে ততদিন মানুষ কে ভয় দেখিয়ে স্বার্থ সিদ্ধি করা যাবে। এই সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের খেলায় পূর্ব মেদিনীপুর থেকে শুরু করে নৈহাটি পর্যন্ত সকল জায়গায় তৃণমূলের হিন্দুত্ববাদী নেতারাও সমান ভাবে জড়িত। তাই খুব সাবধানে মমতা বন্দোপাধ্যায় দাঙ্গার ঘটনা কে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসবাদ বললেও, বিজেপি ও আরএসএস কে পুরানো কংগ্রেসী কায়দায়  সাম্প্রদায়িক সংগঠন বললেও একবারের জন্যেও হিন্দুত্ববাদ বা ব্রাক্ষণত্ববাদ শব্দগুলো উচ্চারণ করেনি। বলা হয়নি যে এই দলগুলোর নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে কোন রকম ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বা কি করে হিন্দুত্ববাদী উগ্রপন্থীরা রাজ্যে ঘাঁটি শক্ত করলো তার তদন্তের কথাও। তাতে হয়তো অতীতে এই দলগুলোকে কি ভাবে প্রত্যক্ষ ভাবে মদত করে বাম আমলে রাজ্যে জমি পাইয়ে দিয়েছিল তৃণমূল ও মমতা - সে কথা আবার প্রকাশ্যে এসে যেত।

প্রদীপ পাশির নাম শোনা আছে ? এক কালের সিপিএমের  মস্তান থেকে বর্তমানে হাজীনগর অঞ্চলের তৃণমূলের কুখ্যাত সিন্ডিকেটবাজ ও তোলাবাজ নেতায় পরিণত হয়েছে এই লোকটা। হাজীনগরের দাঙ্গায় মুসলমান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের হয়ে ব্যাপক হারে উচ্চ জাতির হিন্দুদের ক্ষেপানোর ও নেতৃত্ব দেওয়ার কাজ করে প্রদীপ, কিছুক্ষণের জন্যে পুলিশ তাকে ধরে গারদে পুরলেও, পরে উপর মহলের চাপে প্রদীপ পাশি ছাড়া পায়। তৃণমূলের এহেন নেতা যদি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অবাঙালি গুন্ডাদের সাথে হাত মিলিয়ে মুসলমান নিধন যজ্ঞে অবলীলায় সামিল হতে পারে তাহলে মমতার কি ধর্মনিরপেক্ষতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে ভাষণ দেওয়া সাজে ? মমতার দল তৃণমূলের যে সব নেতারা মাথায় তিলক কেটে ঘুরে বেড়ায়, দূর্গা পূজা কমিটির সভাপতিত্ব করে, মাজারে চাদর চড়ায়, বা ঈদের দিনে মাথায় টুপি পড়ে বাজারে ঘোরে তাদের দিয়ে কি আর ধর্মনিরপেক্ষ শাসন ব্যবস্থা রক্ষা করা যায় ?  যে রাজ্যে তপন থেকে দিলীপ ঘোষের মতন কুখ্যাত হিন্দুত্ববাদী দাঙ্গাবাজেরা সরাসরি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দলীয় সম্মেলনে ধর্মীয় বিদ্বেষ মূলক ভাষণ দেয় আইনের তোয়াক্কা না করে, সেই রাজ্যে মমতা বন্দোপাধ্যায় কোন সুশাসনের কথা বলে। আসানসোলে বিজেপির বহিরাগত সাংসদ সুপ্রিয় বড়াল (বাবুল সুপ্রিয়) হিন্দুদের গরুর আবেগ নিয়ে ক্ষেপিয়ে তুলে যে দাঙ্গা করাতে চাইছে তা কি তৃণমূলের প্রশাসনের ব্রাক্ষণত্ববাদী মাথাদের সমর্থন ছাড়া সম্ভব হতে পারে ? মমতা যে নানা কথার আড়ালে বিজেপি ও আরএসএস কে রাজ্যের রাজনীতির আঙিনায় প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে তুলে ধরে কংগ্রেস ও সিপিএম কে টেক্কা দিতে চাইছে সে কথা কি বোঝা খুব শক্ত ? মমতার রাজত্বে পুলিশ ও প্রশাসনের উপর দলীয় প্রভাব সিপিএমের জমানার চেয়েও তীব্র হওয়া সত্বেও প্রশাসন যখন একদিকে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়তে থাকা বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে আক্রমণ করছে তখনই তারা হিন্দুত্ববাদের ঝান্ডাধারীদের বিরুদ্ধে এত নরম আর এত কোমল কেন ?  


শ্রমিক আন্দোলনের ভাঁটার কারণে পশ্চিমবঙ্গে ছড়িয়েছে  সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প  



সাবর্ণ ভদ্রলোক বাঙালি সমাজে সাম্প্রদায়িকতার প্রভাব প্রবল ছিল তবুও বাংলার মাটিতে বহু বছর ধরে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়নি, এর একমাত্র কারণ ছিল ১৯৫০-৭০ এর দশক অবধি এই রাজ্যে শ্রমিক ও কৃষকের আন্দোলন তীব্র হয়েছিল মালিক-জোতদারদের বিরুদ্ধে। বিশেষ করে নকশালবাড়ির কৃষক আন্দোলনের প্রভাব ছড়িয়ে পড়ার পরে বিপুল ভাবে শ্রমিক ও কৃষক সমাজ আন্দোলিত হয়। সেদিন শ্রমিক ও কৃষকদের জাগ্রত চেতনায় ভীত হয়ে নানা ভাবে কংগ্রেসী শাসকেরা ও জনসংঘের নেতারা চেষ্টা করেছিল পশ্চিমবঙ্গের ঘাড়ে আবার শ্যামা প্রসাদের মতন দানবের ছায়া চাপিয়ে দিতে কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়।পূর্ব বাংলার থেকে শরণার্থী হয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঠাঁই পাওয়া সাবর্ণ উদ্বাস্তুরা বামপন্থী আন্দোলনের সাথে জুড়েছিলেন এবং আন্দোলনের মধ্যে থাকায় তাঁদের মধ্যে, বিশেষ করে মধ্যবিত্তদের মধ্যে যে সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ছিল তা চাপা পড়ে যায়।  শ্রমিক ও কৃষকের ঐক্যবদ্ধ এই জঙ্গী সংগ্রামে জোর ধাক্কা লাগে যখন নানা প্রতিশ্রুতির তুফান ছুটিয়ে জ্যোতি বোসের নেতৃত্বে বামফ্রন্ট সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। কারখানা মালিকদের সাথে হাত মিলিয়ে জ্যোতি বোস আর সিপিএম শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক আন্দোলন কে দুর্বল করতে শুরু করে লক আউটের খেলা। শিল্প নির্ভর শহরগুলো ডুবে যায় অন্ধকারে, শ্রমিকদের বাড়িতে শুরু হয় দু মুঠো ভাতের জন্যে হাহাকার। চা বাগানের শ্রমিকদের না খেতে পেয়ে মুখে রক্ত উঠে মরে যাবার কথা বাদ দিলাম, শহরাঞ্চলের, খাস কলকাতার কাছেপিঠের চটকলগুলোয় কত শ্রমিক, হিন্দু-মুসলমান, বিহারি-বাঙালি নির্বিশেষে না খেতে পেয়ে বা বিনা চিকিৎসায় সেই আশির দশকের মাঝের সময়ের থেকে যে মারা গেছেন তার কোন হিসেব নেই।নব্বইয়ের দশকের থেকে নয়া উদারনৈতিক অর্থনীতির হাওয়া ঢোকার সাথে সাথে এই নিঃশেষ হয়ে যাওয়া শ্রমিক মহল্লায় ঢোকে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিষ। মালিকের দরকার হয় কারখানার বন্ধ জমির উপর বহুতল অট্টালিকার, যেখানে বাস করবে বাংলার মাটির সাথে সম্পর্কহীন একদল ক্লীব রক্তচোষা নয়া পঙ্গপাল শ্রেণীর, ভদ্রলোকের  প্রজাতি। সেই বহুতলের শিল্পের গড্ডালিকায় ডোবা বাংলার মাটিতে শ্রমিকের পিঠে ছুরি চালায় এই সব বন্ধ কারখানার জমির দালালি করা সিপিএম। শ্রমিকরা সিপিএমের এই বেইমানি দেখে ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নেন আর এখানেই ধীরে ধীরে সুযোগ করে নিজের রাজনীতি প্রচার করতে থাকে সংঘ পরিবার। শিল্পহীন ও কর্ম সংস্থানের সুযোগহীন বাংলার শ্রমিক শ্রেণী ক্রমাগত নিঃস্ব ও বাইরের রাজ্যে দিন মজুরে  পরিণত হয়। ধর্মের প্রভাব বাড়ে মানুষের সংকটের কালে আর তাই ধীরে ধীরে মাটির ভিতর শিকড় শক্ত করে হিন্দুত্ববাদী শক্তি। পূর্ব বাংলার থেকে পালিয়ে আসা প্রাক্তন উদ্বাস্তু অভিজাত বাঙালিদের মধ্যে সুপ্ত মুসলমান বিদ্বেষ চাড়া দিয়ে জাগে। বন্ধ কারখানার প্রাক্তন শ্রমিকেরা এবং কোন রকমে চাকরি বাঁচিয়ে কাজ করতে থাকা শ্রমিকদের শেখানো হয় তাঁদের সাথে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যে মুসলমান শ্রমিকটি কাজ করছেন তিনি নাকি পাকিস্তানের চর, তাঁর ছেলে নাকি হিন্দু মেয়ে ফুসলিয়ে বিয়ে করে নিজের ধর্মে বদলে দেবে, তাঁর বাড়িতে নাকি রোজ গরু কাটা হয়, ইত্যাদি। সরকারি বাম আর ডানের মধ্যে কোন ভেদাভেদ ছিল না এই ঘৃণ্য সংঘ পরিবারের রাজনীতি প্রচারের বেলায়। সিপিএম, তৃণমূল, কংগ্রেস, বকলমে সকলেই কোন না কোন ভাবে নিজেদের তৃণমূল স্তরের কর্মীদের দিয়ে ধর্মীয় বিদ্বেষের বিষ ছড়ায়। আজ সেই বিষের বীজ থেকে গড়ে উঠেছে অৰ্থনৈতিক অর্থে মরুভূমি হয়ে ওঠা পশ্চিমবঙ্গের মহীরুহ বিষ বৃক্ষ। শ্রমিক ও কৃষকদের আন্দোলন ও সংগ্রামের পথ থেকে সরিয়ে রাখতে এই সাম্প্রদায়িক বিষ বৃক্ষের ফলই মালিক ও জোতদার শ্রেণীর প্রচন্ড কাজে লাগে, আর তাই তাদের আদেশে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে সরকারি ভাবে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও দাঙ্গার উদ্বোধন করে ফেলেছে মমতার সরকার।এই বিষ বৃক্ষের থেকেই মাটিতে রোপন হচ্ছে সানাউল্লাহ বা প্রদীপ পাশির মতন বিষাক্ত বীজদের  যারা আগামী দিনে আরও ঘৃণ্য রাজনীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে দেবে সংঘ পরিবার কে সাহায্য করতে।

 

বাংলার শ্রমজীবী মানুষ কে ঐক্যবদ্ধ করেই সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিবাদের রথ কে রোখা সম্ভব হবে


একেবারে অশ্বমেধ যজ্ঞ! সুদূর মহারাষ্ট্র থেকে ঘোড়াটা পাঠানো হয়েছে, সদর্পে ছুটে ছুটে সেই ঘোড়া আমাদের শান্তির ফসল নষ্ট করছে এই বাংলার বুকে। আর এই ঘোড়া কে এতদিন রক্ষা করেছে, দানাপানি খাইয়েছে একদল অবাঙালি উঁচু জাতের হিন্দু ব্যবসায়ী ও একদল উঁচু জাতের শহুরে বাঙালি যারা নিজেদের বাঙালি পরিচয় নিয়ে লজ্জিত এবং হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্তান এর পক্ষে ওকালতি করে। এই ঘোড়া আমাদের ক্ষেতের ফসল নষ্ট করেছে, আমাদের জনগণ কে পায়ের ক্ষুর দিয়ে পিষেছে, আর তাই আজ বাঙালি শ্রমজীবী, খেটে খাওয়া শ্রমিক ও কৃষকের, আদিবাসী ভাই বোনেদের, বাংলার দলিত সমাজের, বাংলার মুসলমান ও খ্রিস্টান ভাই বোনেদের কর্তব্য হলো এই সাম্প্রদায়িক ঘোড়ার মুন্ডুচ্ছেদ করার, সুদূর মহারাষ্ট্রে আর দিল্লিতে বসে যারা সারা ভারতের খেটে খাওয়া মানুষ কে জোতদার-জমিদার আর বৃহৎ বিদেশী কর্পোরেট পুঁজি ও তার দেশি মুৎসুদ্দিদের গোলাম বানিয়ে বন্দি করতে চাইছে তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করার।

পশ্চিমবঙ্গে বিগত দুই বছরে যে ভাবে হিন্দুত্ববাদের রথ মমতার গোপন সমর্থনে বলীয়ান হয়ে নিজের প্রতিপত্তি বাড়িয়েছে যে গণতন্ত্র ও প্রগতিশীলতায় বিশ্বাসী বাঙালিদের পক্ষে তাল মেলানো অসম্ভব হয়ে উঠেছে। সরাসরি প্রতিরোধ না করে সরকারি বামপন্থীরা হিন্দুত্ববাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম কে শুধুমাত্র বুদ্ধিজীবি ও ছাত্র সমাজ কেন্দ্রিক করে রেখে ইচ্ছাকৃত ভাবে শ্রমজীবি মানুষকে এই লড়াই থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। শ্রমজীবি জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে কখনোই বিপ্লবী বা প্রগতিশীল রাজনৈতিক চেতনার জন্ম দিতে পারবেন না আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির কারণে আর তাই এই শ্রেণীর মানুষের মধ্যে নিজেদের বিষাক্ত রাজনীতির প্রসার করা আজ বিজেপি ও আরএসএস এর কাছে একেবারে জলভাত হয়ে উঠেছে। সারা বাংলা জুড়ে যখন বিজেপি হিন্দুত্ববাদের ঝাণ্ডা তুলে তীব্র ধর্মীয় মেরুকরণের পক্ষে সোচ্চার হয়ে পথে নেমেছে, সুদূর পাড়া গাঁয়ে ঢুকে কৃষকে কৃষকে দাঙ্গা লাগাবার উস্কানি দিচ্ছে তখন গুটিকয়েক ছাত্র-ছাত্রী ও কিছু সাংস্কৃতিক কর্মীদের দিয়ে মিছিল করানো বাদে বাম আন্দোলনের তথাকথিত কান্ডারীরা আর কিছুই করেনি। আজ এই সংকীর্ণতার গন্ডি পেরিয়ে, এই comfort zone  এর থেকে বাইরে এসে, চেনা গন্ডির বাইরে এসে, সাধারণ খেটে খাওয়া শ্রমিক কৃষকের কাছে পৌঁছে তাঁদের মধ্যে লেগে পড়ে থেকে হিন্দুত্ববাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তোলা। আজ দরকার সমস্ত আদিবাসী, দলিত, ও শোষিত জনজাতির জনগণের শ্রমজীবি অংশ কে পশ্চিমবঙ্গের আক্রান্ত সংখ্যালঘু মুসলমান সম্প্রদায়ের সাথে সংগ্রামী মেলবন্ধে জড়িত করা, কারণ সংঘ পরিবার পরবর্তী কালে উচ্চ জাতির হিন্দু বাঙালিদের সাহায্যে আক্রমণ এই সকল সম্প্রদায়ের উপর নামিয়ে আনবে।  এটাই হিন্দুত্ববাদী-ব্রাক্ষণত্ববাদী ফ্যাসিবাদের মূল লক্ষণ।


গণতন্ত্র প্রিয় প্রতিটি প্রগতিশীল বাঙালিকে আজ পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠা এই হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিবাদের সাপ কে মারতে উদ্যোগ নিতে হবে, জনগণের প্রাণ, জীবিকা, ও সম্পত্তি রক্ষার জন্যে যখন তৃণমূলের সরকার কিছুই করবে না, যখন তৃণমূলের নেতারা রাত বিরেতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ঝান্ডা নিয়ে এসে সংখ্যালঘু মুসলমান ও খ্রিস্টানদের বাড়িতে আগুন লাগাবার চেষ্টা করবে, মেয়েদের ধর্ষণ করার চেষ্টা করবে, পুরুষদের গুম খুন করবে, তখন সামগ্রিক ভাবে সমস্ত গণতান্ত্রিক চেতনা সম্পন্ন মানুষ কে এগিয়ে আসতে হবে, লড়তে হবেই এই কর্পোরেট স্পনসরশিপ প্রাপ্ত সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এবং এক হয়ে পরাস্ত করতে হবে এই আগ্রাসন কে। বাংলা আর বাঙালির অস্তিত্ব এই হিন্দুত্ববাদের আগ্রাসনের সামনে বিপর্যস্ত হয়ে যাবে যদি আজ থেকেই দলগত, ব্যক্তিগত, নীতিগত বিভেদ দূর করে আমরা সবাই এক হয়ে লড়াই শুরু না করি। বাংলার মাটিতে যদি ফ্যাসিবাদ কে পরাস্ত করা যায় তাহলে কিন্তু সমস্ত ভারতের সামনেই তা এক উদাহরণ হয়ে গণতন্ত্রের দাবিতে লড়তে থাকা মানুষ কে সাহস ও অনুপ্রেরণা দেবে গেরুয়া বাহিনী কে পরাস্ত করার লড়াইয়ে এগিয়ে আসতে। আজ উদাহরণ ও অনুপ্রেরণার বড়ই অভাব, তাই আসুন আমরা একজোট হয়ে উদাহরণ সৃষ্টি করি, অনুপ্রেরণা দিই দেশজোড়া বিজেপি-আরএসএস বিরোধী সংগ্রাম কে।    

এই ব্লগের সত্বাধিকার সম্বন্ধে